ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তে মুরাদুর রহমান মুন্না নামে এক যুবক বিএসএফের নির্যাতনে মারা গেছে বলে অভিযেগ পাওয়া গেছে। পরিবারের অভিযোগ, মুন্নাকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে আহত করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ফেলে রাখা হয়। মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুন্না ওই গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে তার লাশ রাখা হয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, বিকেলের দিকে মুন্না তার ধানি জমি দেখতে সেজামুড়া সীমান্তের কাছে যান। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাংলাদেশ সীমান্তে ফেলে রেখে চলে যায় তারা।
এসময় বিজিবি সদস্যরা টহলে গেলে তাকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্নার স্ত্রী রত্না বেগম অভিযোগ করে বলেন,’সীমান্তের কাছে আমাদের জমিতে সবজি চাষ করা হয়। বিকেলে আমার স্বামী সেই সবজি ক্ষেত দেখতে যায়।
অনেক সময় পার হলেও না আসায় আমি খোজাখুজি শুরু করি। পরে একজন ফোন দিয়ে জানায় বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় আমি ঘটনাটি জানাই, তারপরও তার সন্ধান পাচ্ছিলাম না। অনেক পর আমার স্বামীকে আহত অবস্থায় পাই। বিএসএফ তাকে মারধর করেছে বলে জানায়।
বড় বোন আমেনা খাতুন বলেন, ‘সন্ধ্যায় বিজিবি খবর দিলে ধানক্ষেত থেকে আমার ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে তাকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখান থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের এক সন্তান প্রতিবন্ধী। এখন এই পরিবারের দেখাশোনা কে করবে? বিএসএফ আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে মারধর করে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: আরাফাত বলেন, ‘হাসপাতাল আনার পর আমরা তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করি। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ সাংবাদিকদের জানান, ‘ঘটনাটির তদন্ত চলছে। ওই যুবক কী কারণে সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন বা বিএসএফ তাকে ধরেছিল কি না, না অন্য কেও মেরেছে তা জানা যায়নি।’
খুলনা গেজেট/এনএম